Back  
Print This Document

প্রযুক্তির বিবরণ

প্রযুক্তির নাম :গ্রীষ্মকালীন টমেটো উৎপাদনে ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে সার এবং পানি ব্যবস্থপনা প্যাকেজ প্রযুক্তি

বিস্তারিত বিবরণ : 

ফার্টিগেশন বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সেচ প্রযুক্তি যার চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে পানিতে দ্রবণীয় সার যেমন ইউরিয়া, পটাশ ইত্যাদি পানির সাথে মিশিয়ে ফসলে প্রয়োগ করা হয়। এই পদ্ধতিতে প্রচলিত পদ্ধতির চাইতে ৩৫-৪০ ভাগ পটাশ এবং ৫০-৫৫ ভাগ ইউরিয়া ও প্রায় ৫০ ভাগ সেচের পানি সাশ্রয় হয়। সার এবং পানি সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও ফার্টিগেশন পদ্ধতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে কম সময়ে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব। উন্নত সার এবং পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে চাষ করলে আশানুরূপ ফলন এবং অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব।
সাধারণত মধ্য জুন গ্রীষ্মকালীন টমেটো রোপনের উপযুক্ত সময়। ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা পলিথিন টানেলের বেডে ৫৫ সে.মি বাই ৪০ সে.মি দূরে রোপন করতে হবে। বৃষ্টি থেকে রক্ষার জন্য টমেটোর চারা পলি টানেলে রোপন করতে হয়। লাইনের চারা রোপনের জন্য বেডের সাইজ ২.২ মিটার প্রস্থ এবং ৪ মিটার দৈর্ঘ্য হওয়া বাঞ্চনীয়।
ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে ইউরিয়া এবং পটাশ কম লাগে এবং সারের অপচয় হয় না। এই পদ্ধতিতে হেক্টর প্রতি ২০০ কেজি ইউরিয়া, ২৬৫ কেজি টিএসপি, ২৫০ কেজি পটাশ, ১.০ কেজি বোরন, ৪.০ কেজি জিঙ্ক এবং ৪.০ কেজি ম্যাগনিশিয়াম ব্যবহার করতে হয়। ইউরিয়া এবং পটাশ ছাড়া বাকী সারগুলো সবটুকু জমি তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া এবং পটাশ চারা রোপনের ১৫ দিন, ৩০ দিন, ৪৫ দিন এবং ৬০ দিন পর সমান ৪ (চার) ভাগে সেচের পানির সংগে মিশিয়ে ড্রিপ সেচের মাধ্যমে ফসলে প্রয়োগ করতে হবে। প্রধান প্রধান রাসায়নিক সারের সাথে গোবর সার (Micro-nutrient) ব্যবহার করলে গুণগতভাবে ফলের আকার ও রং আকর্ষণীয় হয়।
ড্রিপ সেচ পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পানি প্রতি ২ দিন পর পর প্রয়োগ করতে হয়। ভূ-উপরিস্থ পানির বাষ্পায়ন রোধে ধানের খড় মাল্চ হিসাবে ব্যবহার করলে ভাল হয়। সাধারণতঃ প্রতি ১৪০ লিটার পানিতে ১ কেজি সার মিশিয়ে ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় সার নিয়মিত সেচের সাথে প্রয়োগ করতে হয়। ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০-৪০ টন গ্রীষ্মকালীন টমেটো উৎপাদন করা সম্ভব, যাহা প্রচলিত পদ্ধতির চাইতে প্রায় ৩০-৩২ ভাগ বেশি।
এই পদ্ধতিতে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে শতকরা ৪৫-৫৫ ভাগ সার এবং ৪০-৪৫ ভাগ সেচের পানি কম লাগে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল গুণগতমান ভাল হওয়ার কারণে বাজার মূল্য বেশি পাওয়া যায়। ফার্টিগেশন পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করলে হেক্টর প্রতি নীট মুনাফা ১২,০০০.০০-১৫,০০০.০০ টাকা পাওয়া সম্ভব। যা শীতকালীন টমেটো চাষে মুনাফার চেয়ে ২.০-২.৫ গুণ বেশি পাওয়া যায়। খড়াপীড়িত ও সেচ সংকট এলাকা, লবণাক্ত অঞ্চলে এবং পাহাড়ী অঞ্চলে সেচের পানির অভাব, সেখানে ড্রিপ খুবই উপযোগী সেচ পদ্ধতি। বর্তমানে এ উন্নত পদ্ধতির যাবতীয় উপকরণ স্থানীয়ভাবে তৈরি করা যায়।

গ্রীষ্মকালীন টমেটো উৎপাদনে ড্রিপ সেচ ছবি ( ১ )

গ্রীষ্মকালীন টমেটো উৎপাদনে ড্রিপ সেচ ছবি ( ২ )


প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন।
 
Back