Back  

প্রশ্ন/উত্তর/মতামত

প্রশ্ন

বিষয় : পেঁপে গাছের বৃদ্ধি হচ্ছে না।
বিস্তারিত :২ মাস পূর্ণ হলেও আমার ৪০ টি পেঁপে গাছের উচ্চতা মাত্র ১০ ইঞ্চি বা তার চেয়ে কম। আমি খুব হতাশাগ্রস্ত হয়ে গেছি। সমাধান দিলে উপকৃত হবো।

উত্তর/মতামত

পেঁপের ভাল বৃদ্ধি ও ফলন পেতে নিম্নোক্ত চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করুন: চারা তৈরিঃ পেঁপের চারা বীজতলায় তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে ১০-১৫ সে.মি. দূরত্বে সারি করে প্রতি সারিতে ৩-৪ সে.মি. পরপর ১.০-১.৫ সে.মি. গভীরে বীজ বপন করতে হবে। পলিথিন ব্যাগেও চারা উৎপাদন করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ১৫ × ১০ সে.মি. আকারের পলি ব্যাগ সমপরিমাণ পলিমাটি, বালি ও পঁচা গোবরের মিশ্রন দ্বারা প্রায় সম্পূর্নরুপে ভর্তি করতে হয়। পলিব্যাগের তলায় ২-৩ টি ফুটো করতে হবে এবং প্রতিটি ব্যাগে ২-৩ টি বীজ বপন করতে হবে। বীজ বপণের পর ২/ ৩ দিন অন্তর পানি দিতে হবে। বপনের ১৫-২০ দিন পর চারা বের হয় এবং ৪০-৫০ দিন পর তা রোপণের উপযোগী হয়। বীজের হার/চারার পরিমাণঃ পেঁপের জন্য ২× ২ মি. দূরত্বে গর্ত তৈরি করে প্রতি গর্তে ৩ টি করে চারা রোপণ করা হলে হেক্টরপ্রতি ৭৫০০টি চারা লাগবে এবং শেষাবধি ২৫০০ টি গাছ থাকবে। এই পরিমাণ সুস্থ্য সবল চারা পেতে ৪০০-৫০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। তবে হাইব্রীড পেঁপের জাতের জন্য ১০০-১৫০ গ্রাম বীজই যথেষ্ট। গর্ত তৈরিঃ চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পূর্বে বেডের মাঝ বরাবর ২ মিটার দূরত্বে ৬০ × ৬০× ৪৫ সে.মি. আকারের গর্ত তৈরি করতে হবে। গর্ত প্রতি ১৫ কেজি পঁচা গোবর, ৫০০ গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম জিপসাম, ২০ গ্রাম বরিক এসিড এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালভাবে মেশাতে হবে। সার মিশ্রিত মাটি দ্বারা গর্ত পূরণ করে সেচ দিতে হবে। বীজ বপন ও চারা রোপণের সময়ঃ আশ্বিন (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) এবং পৌষ (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) মাস পেঁপের বীজ বপনের উত্তম সময়। বপনের ৪০-৫০ দিন পর চারা রোপণের উপযোগী হয়। চারা রোপণঃ চারা লাগানোর পূর্বে গর্তের মাটি উলট-পালট করে নিতে হয়। প্রতি গর্তে ৩০ সে.মি. দূরত্বে ত্রিভূজ আকারে ৩ টি করে চারা রোপণ করতে হয়। বীজ তলায় উৎপাদিত চারার উন্মুক্ত পাতা সমূহ রোপণের পূর্বে ফেলে দিলে রোপণকৃত চারার মৃত্যু হার কমবে এবং চারা দ্রুত প্রতিষ্ঠিত হবে। পলিব্যাগে উৎপাদিত চারার ক্ষেত্রে পলিব্যাগটি খুব সাবধানে অপসারণ করতে হবে যাতে মাটির বলটি ভেঙ্গে না যায়। পড়ন্ত বিকাল চারা রোপণের সর্বোত্তম সময়। রোপণের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে চারার গোড়া যেন বীজতলা বা পলিব্যাগে মাটির যতটা গভীরে ছিল তার চেয়ে গভীরে না যায়। গাছে সার প্রয়োগঃ ভাল ফলন পেতে হলে পেঁপেতে সময়মত সার প্রয়োগ করতে হবে। উপরি হিসেবে গাছ প্রতি ৪৫০-৫০০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৪৫০-৫০০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা রোপণের এক মাস পর হতে প্রতি মাসে গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল আসার পর এই মাত্রা দ্বিগুণ করতে হবে। মাটিতে রস না থাকলে পানি সেচের ব্যবস্থা করা আবশ্যক।