কৃষি প্রযুক্তি ভাণ্ডার
প্রযুক্তির বিবরণ
প্রযুক্তির নাম :স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ ও রসুন উৎপাদন
বিস্তারিত বিবরণ :
স্প্রিংকলারসেচ পদ্ধতির বৈশিষ্ঠ্য:
১। ইহা এমন একটি সেচ পদ্ধতি যা জলাধার হতে পাম্প, পানি বিতরণের পাইপ এবং স্প্রিংকলার সিস্টেমের মাধ্যমে পানি বাতাসে স্প্রে করে ছোট ছোট ফোঁটা আকারে বৃষ্টির মত করে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করা হয়। ইহা ওভারহেড সেচ পদ্ধতি নামেও পরিচিত।
২। পানি পরিবহনে নালা তৈরীরপ্ রয়োজন হয় না তাই পানির পরিবহন জনিত কোন ক্ষতি নেই।
৩। এঁটেল মাটি ছাড়া সব ধরনের মাটির জন্যই এ পদ্ধতি উপযোগী।
৪। পাহাড়ী এলাকা বা উঁচু-নীচু জমিতে যেখানে অন্য পদ্ধতি উপযোগী নয়।
৫। খুব কাছাকাছি লাগানো ফসলের ক্ষেত্রে।
৬। সেচ পানি সাশ্রয়ী ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
৭। এ পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করলে পানির অনুস্রবন জনিত বা গড়িয়ে যাওয়া ক্ষতি হয় না।
৮। এই পদ্ধতি অগভীর মূলের ফসলে যেখানে ঘন ঘনপানি দেয়ার প্রয়োজন পড়ে যেমন- পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ফসলে উপকারি।
৯। বীজ বোনার পর এই পদ্ধতিতে হালকা সেচ দিলে বীজের অংকুরোদগম নিশ্চিত হয় এবং বীজের কোন পচনজনিত ক্ষতি হয় না।
১০। সেচ পানির সুষম বন্টন হয় ফলে পানি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়
১১। প্রাথমিক খরচ অন্যান্য সেচ পদ্ধতির চেয়ে বেশি।
১২। এঁটেল মাটির ফসলের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুপযোগী।
১৩। সেচ প্রয়োগের সময় বাতাসের বেগ বেশি থাকলে পরিষ্কার পানির প্রয়োজন।
১৪। অপরিষ্কার পানি দ্বারা সেচ প্রয়োগ করলে স্প্রিংকলার নজেল বন্ধ হয়ে যায়।
১৫। এই পদ্ধতিতে পানির বাষ্পীভবন জনিত ক্ষতি বেশি হয় যদি নজেল প্রেসার, বায়ুপ্রবাহ, তাপমাত্রা বেশি হয়।
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন:
• পেঁয়াজ অগভীর মূলীয় ফসল হওয়ায় ভাল ফলন পেতে ঘন ঘন সেচ প্রদান করতে হয়, যা একমাত্র স্প্রিংকলার পদ্ধতিতেই সম্ভব।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে প্রস্বেদনের ১০০-১২০% মাত্রার সেচ ৭ দিন অন্তর প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
• চারা লাগানোর পর ২/৩ দিন অন্তর সেচ প্রয়োগ করতে হবে ১৫ দিন পর্যন্ত ।
• পেঁয়াজ ফসল তোলার ১৫ দিন পূর্বে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রদান করলে প্রায় ৩০% পানি সাশ্রয় পাশাপাশি ৪০-৪৫% ফলন বৃদ্ধি হয়। এর ফলে বেশি এলাকায় সেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৩: ১।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগে পেঁয়াজে থ্রিপ্স পোকার আক্রমন কম হয়।
ভূ-পৃষ্ঠস্থ (প্লাবন সেচ) ও স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে পেঁয়াজে সেচ প্রয়োগের নির্ঘন্ট (সিডিউল)
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে রসুন উৎপাদন
• রসুনে ফসলের চাহিদা অনুযায়ী ৮ থেকে ১০ দিন অন্তর স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করলে প্রচলিত সেচ পদ্ধতির চেয়ে শতকরা প্রায় ১৫-২০ ভাগ বেশি ফলন পাওয়া যায় এবং শতকরা প্রায় ২০-২৫ ভাগ পানি সাশ্রয় হয়।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে প্রস্বেদনের ৮০-১০০% মাত্রার সেচ ১০ দিন অন্তর প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
• মাটিতে রস কম থাকলে রসুনের কোয়া লাগানোর পর পর হালকা সেচ দিতে হবে।
• এই পদ্ধতিতে রসুন চাষ করলে কৃষক পদ্ধতি অপেক্ষা প্রতি হেক্টরে প্রায় ১ লাখ টাকা বেশী আয় সম্ভব।
• স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে রসুন উৎপাদনের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ২:১ ।
রসুনে সেচ প্রয়োগে বিবেচ্য বিষয়াবলীঃ
• রসুন অগভীর মূলীয় ফসল হওয়ায় সতর্কতার সাথে সেচপ্রদান দরকার। সেচ প্রয়োজনের তুলনায় বেশী হলে মুলাঞ্চলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় ফলে গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
• রসুনের প্রাথমিক বৃদ্ধি পর্যায়ে পানি কম লাগে তবে গাছ বৃদ্ধির সাথে সাথে পানির চাহিদা বেড়ে যায়।
• সাধারণত ১০/১৫ দিন অন্তর সেচ প্রদান করতে হয়। তবে রসুন পরিপক্ক হওয়ায় অন্তত ২০ দিন পূর্বে সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হয়।
• কন্দ গঠন এবং বৃদ্ধি পর্যায়ে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পায় এ সময়ে সেচ প্রদান না করলে ফলনের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই এ পর্যায়কে সেচ প্রদান করলে কন্দের বৃদ্ধি ব্যহত হয় আবার অধিক সেচ প্রয়োগ করলে রসুনের কন্দে পচন ধরে।
• অতিরিক্ত ভেজা অবস্থায় রসুনের বাইরের খোসা(scale) ফেটে যায়।
ভূ-পৃষ্ঠস্থ (প্লাবন সেচ) ও স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে রসুনে সেচ প্রয়োগের নির্ঘন্ট
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন ছবি-১
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন ছবি-২
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন।
বিস্তারিত বিবরণ :
স্প্রিংকলারসেচ পদ্ধতির বৈশিষ্ঠ্য:
১। ইহা এমন একটি সেচ পদ্ধতি যা জলাধার হতে পাম্প, পানি বিতরণের পাইপ এবং স্প্রিংকলার সিস্টেমের মাধ্যমে পানি বাতাসে স্প্রে করে ছোট ছোট ফোঁটা আকারে বৃষ্টির মত করে ফসলের জমিতে প্রয়োগ করা হয়। ইহা ওভারহেড সেচ পদ্ধতি নামেও পরিচিত।
২। পানি পরিবহনে নালা তৈরীরপ্ রয়োজন হয় না তাই পানির পরিবহন জনিত কোন ক্ষতি নেই।
৩। এঁটেল মাটি ছাড়া সব ধরনের মাটির জন্যই এ পদ্ধতি উপযোগী।
৪। পাহাড়ী এলাকা বা উঁচু-নীচু জমিতে যেখানে অন্য পদ্ধতি উপযোগী নয়।
৫। খুব কাছাকাছি লাগানো ফসলের ক্ষেত্রে।
৬। সেচ পানি সাশ্রয়ী ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায়।
৭। এ পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করলে পানির অনুস্রবন জনিত বা গড়িয়ে যাওয়া ক্ষতি হয় না।
৮। এই পদ্ধতি অগভীর মূলের ফসলে যেখানে ঘন ঘনপানি দেয়ার প্রয়োজন পড়ে যেমন- পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ফসলে উপকারি।
৯। বীজ বোনার পর এই পদ্ধতিতে হালকা সেচ দিলে বীজের অংকুরোদগম নিশ্চিত হয় এবং বীজের কোন পচনজনিত ক্ষতি হয় না।
১০। সেচ পানির সুষম বন্টন হয় ফলে পানি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়
১১। প্রাথমিক খরচ অন্যান্য সেচ পদ্ধতির চেয়ে বেশি।
১২। এঁটেল মাটির ফসলের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুপযোগী।
১৩। সেচ প্রয়োগের সময় বাতাসের বেগ বেশি থাকলে পরিষ্কার পানির প্রয়োজন।
১৪। অপরিষ্কার পানি দ্বারা সেচ প্রয়োগ করলে স্প্রিংকলার নজেল বন্ধ হয়ে যায়।
১৫। এই পদ্ধতিতে পানির বাষ্পীভবন জনিত ক্ষতি বেশি হয় যদি নজেল প্রেসার, বায়ুপ্রবাহ, তাপমাত্রা বেশি হয়।
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন:
• পেঁয়াজ অগভীর মূলীয় ফসল হওয়ায় ভাল ফলন পেতে ঘন ঘন সেচ প্রদান করতে হয়, যা একমাত্র স্প্রিংকলার পদ্ধতিতেই সম্ভব।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে প্রস্বেদনের ১০০-১২০% মাত্রার সেচ ৭ দিন অন্তর প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
• চারা লাগানোর পর ২/৩ দিন অন্তর সেচ প্রয়োগ করতে হবে ১৫ দিন পর্যন্ত ।
• পেঁয়াজ ফসল তোলার ১৫ দিন পূর্বে সেচ দেওয়া বন্ধ করতে হবে।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রদান করলে প্রায় ৩০% পানি সাশ্রয় পাশাপাশি ৪০-৪৫% ফলন বৃদ্ধি হয়। এর ফলে বেশি এলাকায় সেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ৩: ১।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগে পেঁয়াজে থ্রিপ্স পোকার আক্রমন কম হয়।
ভূ-পৃষ্ঠস্থ (প্লাবন সেচ) ও স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে পেঁয়াজে সেচ প্রয়োগের নির্ঘন্ট (সিডিউল)
পদ্ধতি | প্রতি সেচে পানির পরিমাণ (মি. মি) | |||||
প্রাথমিক পর্যায় (০-২৫ দিন) | বৃদ্ধি পর্যায় (২১-৪৫ দিন) | কন্দ গঠন ও বৃদ্ধ পর্যায় (৪৫-৬৫ দিন) | কন্দ পরিপক্ক পর্যায় (৬৬-৯০ দিন) | |||
ভূ-পৃষ্ঠস্থ সেচ (১৫ দিন অন্তর) | ২০-২৫ | ৩৫-৪০ | ৪৫-৫০ | ৪০-৪৫ | ||
স্প্রিং কলার সেচ (৭ দিন অন্তর) | ১০-১২ (২-৩ দিন অন্তর) | ১৫-১৮ | ৩৫-২৮ | ২২-২৫ |
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে রসুন উৎপাদন
• রসুনে ফসলের চাহিদা অনুযায়ী ৮ থেকে ১০ দিন অন্তর স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে সেচ প্রয়োগ করলে প্রচলিত সেচ পদ্ধতির চেয়ে শতকরা প্রায় ১৫-২০ ভাগ বেশি ফলন পাওয়া যায় এবং শতকরা প্রায় ২০-২৫ ভাগ পানি সাশ্রয় হয়।
• স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে প্রস্বেদনের ৮০-১০০% মাত্রার সেচ ১০ দিন অন্তর প্রয়োগ করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।
• মাটিতে রস কম থাকলে রসুনের কোয়া লাগানোর পর পর হালকা সেচ দিতে হবে।
• এই পদ্ধতিতে রসুন চাষ করলে কৃষক পদ্ধতি অপেক্ষা প্রতি হেক্টরে প্রায় ১ লাখ টাকা বেশী আয় সম্ভব।
• স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে রসুন উৎপাদনের আয়-ব্যয়ের অনুপাত ২:১ ।
রসুনে সেচ প্রয়োগে বিবেচ্য বিষয়াবলীঃ
• রসুন অগভীর মূলীয় ফসল হওয়ায় সতর্কতার সাথে সেচপ্রদান দরকার। সেচ প্রয়োজনের তুলনায় বেশী হলে মুলাঞ্চলে অক্সিজেনের অভাব দেখা দেয় ফলে গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করে।
• রসুনের প্রাথমিক বৃদ্ধি পর্যায়ে পানি কম লাগে তবে গাছ বৃদ্ধির সাথে সাথে পানির চাহিদা বেড়ে যায়।
• সাধারণত ১০/১৫ দিন অন্তর সেচ প্রদান করতে হয়। তবে রসুন পরিপক্ক হওয়ায় অন্তত ২০ দিন পূর্বে সেচ প্রদান বন্ধ রাখতে হয়।
• কন্দ গঠন এবং বৃদ্ধি পর্যায়ে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পায় এ সময়ে সেচ প্রদান না করলে ফলনের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই এ পর্যায়কে সেচ প্রদান করলে কন্দের বৃদ্ধি ব্যহত হয় আবার অধিক সেচ প্রয়োগ করলে রসুনের কন্দে পচন ধরে।
• অতিরিক্ত ভেজা অবস্থায় রসুনের বাইরের খোসা(scale) ফেটে যায়।
ভূ-পৃষ্ঠস্থ (প্লাবন সেচ) ও স্প্রিংকলার পদ্ধতিতে রসুনে সেচ প্রয়োগের নির্ঘন্ট
পদ্ধতি | প্রতি সেচে পানির পরিমাণ (মি. মি) | |||||
প্রাথমিক পর্যায় (০-৩০ দিন) | বৃদ্ধি পর্যায় (৩১-৭০ দিন) | কন্দ গঠন ও বৃদ্ধ পর্যায় (৭০-১০০ দিন) | কন্দ পরিপক্ক পর্যায় (১০১-১২৫ দিন) | |||
ভূ-পৃষ্ঠস্থ সেচ (১৫ দিন অন্তর) | ২০-২৫ | ৩৫-৪০ | ৪৫-৫০ | ৪০-৪৫ | ||
স্প্রিং কলার সেচ (১০ দিন অন্তর) | ১৫-১৮ | ২০-২২ | ৩২-৩৫ | ২২-২৫ |
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন ছবি-১
স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদন ছবি-২
প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন।