Back  
Print This Document

প্রযুক্তির বিবরণ

প্রযুক্তির নাম :নারিকেলের সমন্বিত ফসল ব্যবস্থাপনা

বিস্তারিত বিবরণ : 
সার প্রয়োগের সময় ও প্রয়োগ পদ্ধতিঃ নারিকেল গাছে বছরে দুইবার সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথমবার সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে এবং দ্বিতীয়বার এপ্রিল/মে মাসে। সার প্রয়োগের আগে নারিকেল গাছ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। পুরাতন ডগা ও ডগার গোড়ায় জমে থাকা ময়লা ও পাতা জাতীয় আবর্জনা অপসারণ করতে হবে। মড়া ও বয়স্ক ডগা ছেটে ফেলতে হবে। সার ব্যবহার ভূমির উর্বরতার উপর নির্ভর করে। পনের বছর বয়সী গাছ এবং এর বেশী বয়সের গাছে প্রতি বছরে ইউরিয়া ১২২০-১৪৬৫ গ্রাম, টিএসপি ৬২৫-৭৫০ গ্রাম, এমওপি ২৫০০-৩০০০ গ্রাম, জিপসাম ৪৯৪-৫৮১ গ্রাম, জিংক সালফেট ৭৪-৯০ গ্রাম, বোরিক এসিড ৩৬-৪৪ গ্রাম এবং পঁচা গোবর ২০ কেজি প্রয়োগ করতে হবে। উল্লিখিত ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার দুইভাগে ভাগ করে অর্ধেক সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে একবার এবং বাকী অর্ধেক এপ্রিল/মে মাসে প্রয়োগ করতে হবে। জিপসাম, বোরিক এসিড, জিংক সালফেট এবং গোবর সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাসে একবার প্রয়োগ করতে হবে। সার ও গোবর সার গোলাকার বেসিন পদ্ধতিতে গাছের গোড়া থেকে ১ মিটার বাদ রেখে ০.৮ মি. এলাকায় সার প্রয়োগ করতে হবে এবং সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিতে হবে। নারিকেল গাছের বাড ব্রেক বা প্রাইমোরডিয়া জন্মানোর পর ১০ দিন অন্তর চারবার সেচ প্রয়োগ করতে হবে। নারিকেল গাছের বিধ্বংসী পোকা রোগোছ স্পাইরালিং হোয়াইট ফ্লাই এর সমন্বিত দমন ব্যবস্থাপনাঃ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত নারিকেলের পাতা পূর্ণাঙ্গ ও বাচ্চাপোকাসহ কেটে আগুনে পুড়ে ঝলসিয়ে দিতে হবে। আক্রান্ত পাতায় এসিটামিপ্রিড গ্রুপভূক্ত রাসায়নিক বালাইনাশক যেমন তুন্দ্রা ২০ এসপি বা প্লাটিনাম ২০ এসপি বা অন্য নামের (প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হিসাবে) এবং জৈব বালাইনাশক ফিজিমাইট বা বায়োক্লিন (প্রতি লিটার পানিতে ১ মিলি হিসাবে) পর্যায়ক্রমিক ভাবে ১৫ দিন অন্তর অন্তর আক্রান্ত পাতায় স্প্রে করতে হবে। অর্থাৎ এক বার রাসায়নিক বালাইনাশক স্প্রে করা হলে পরের বার জৈব বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে। এভাবে মোট ২-৩ বার বালাইনাশক স্প্রে করার প্রয়োজন হয়। নারিকেলের পাতার দাগ ও কুঁড়ি পঁচা (বাড রট) রোগের দমন ব্যবস্থাপনাঃ পাতার দাগ ও কুঁড়ি পঁচা (বাড রট) রোগ ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তিঃ ১। পরিচ্ছন্নতাকরণ (২ বার, মে মাসে ১মবার এবং অক্টোবর মাসে ২য় বার)+ ২। গাছ পরিস্কার করার সাথে সাথে অটোস্টিন (কার্বেন্ডাজিম) @ ২ গ্রাম / লিটার পানিতে মিশিয়ে পাতায় ১ বার এবং ১৫ দিন পর দ্বিতীয় বার স্প্রে করা + সিকিউর (ফেনামিডিন + ম্যানকোজেব) @ ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছের কুঁড়িতে ২ বার ১৫ দিন অন্তর স্প্রে করা । গাছের বয়স অনুযায়ী পরিমিত সার প্রয়োগ করতে হবে। রোগ ব্যবস্থাপনায় সারের ভূমিকা সারাসরি না দেখা গেলেও, রোগ দমনের জন্য পরিমিত সার প্রয়োগ করা অপরিহার্য। এছাড়াও গন্ডার পোকা ও সাদা মাছি সহ অন্যান্য পোকামাকড় গাছে রোগ সৃস্টি করতে সহায়তা করে। তাই এসকল পোকামাকর দেখার সাথে সাথেই দমনের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। উল্লেখিত সমন্বিত ব্যবস্থাপনা সঠিক সময়ে যথাযথভাবে করলেই গাছের রোগ দমন করা সম্ভব হবে এবং ফলন বৃদ্ধি পাবে। <•> প্রতি গাছে নারিকেলের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে ও ডাবের পানির পরিমান বৃদ্ধি পাবে। <•> এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে রোগোছ স্পাইরালিং হোয়াইট ফ্লাই পোকার আক্রমণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে নারিকেলের সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। <•> নারিকেলের পাতার দাগ ও কুঁড়ি পঁচা (বাড রট) রোগ দমনের মাধ্যমে নারিকেল উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ।


প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলুন।
 
Back